বইটির বিবরণ
'ওর দীর্ঘ অনম্বর উরুদ্বয়ে রাশিয়ান জারের সিংহাসনের জৌলুস! কিংবা সেইন্ট আইজ্যাক ক্যাথেড্রালের চোখ ঝলসানো সৌষ্ঠব। মেঝেতে শুয়ে থাকা অলস রোদ বিড়ালের মতো ওর পায়ে পায়ে দেহ ঘষে মরে যেতে চায়। অদ্ভুত সায়ানাইড যৌবন!' রাশিয়ার মেয়ে নাস্তিয়াকে নিয়ে জায়মান ব্যবসায়ী অভ্র সিঙ্গাপুরে এসেছে। তাদের প্রেমানুভূতির বিস্তীর্ণ প্রান্তরে শুয়ে আছে একটি দেশ, পৃথিবীর এক ষষ্ঠাংশ জুড়ে ছিল যার বিস্তার, সোভিয়েত ইউনিয়ন। দেশটির সরল, বিশ্বাসপ্রবণ এবং পুঁজিবাদী কূটকৌশল ও প্রতারণা সম্পর্কে অনবহিত ও অসন্দিহান মানুষগুলোকে প্রলুব্ধ ও সম্মোহিত করে কীভাবে সুচিন্তিত ও সুপরিকল্পিতভাবে দেশটিকে ভেঙে পশ্চিমের কাছে নতজানু করা হলো তার প্রেক্ষাপট নিয়ে সময়কে মূল চরিত্র করে লেখা এই উপন্যাস। বাংলাদেশের অনেক ছাত্রছাত্রী সমাজটির অসংখ্য ভালো ও অসংখ্য মন্দ দেখতে পেলেও পেরেস্ত্রোইকার সময়ে চোখের সামনে দেখল বহু সুন্দরকে অসুন্দরে, অসুন্দরকে কুৎসিত ও কদর্যে পরিণত হতে এবং তাদের অনেকেই নিজেরাও বিভিন্ন মেটামরফোসিসে বিবর্তিত হয়ে গেল। প্রেম, পরকীয়া, বৈধ-অবৈধ কর্মকাণ্ড, আশা ও স্বপ্নমৃত্যু দ্রবীভূত হয়ে গেল একে অন্যে। সুন্দর কি কিছুই রইল না? রইল অতুলনীয় ও অপরাজেয় 'রুশ আত্মা' আর তার নারীরা জীবনযুদ্ধে অভঙ্গুর, অপাপবিদ্ধ সৌন্দর্য, মানসিক সৌকর্য ও অপরিসীম মানবিকতাবোধ নিয়ে অতুলনীয়। বাংলা উপন্যাসের জমিতে ভিন্ন ভূগোল, ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের বীজ বপন করে ভাষা সৌন্দর্যে অনন্য, মানবিকতার একটি চিরন্তন দলিল সৃষ্টি করেছেন শাহাব আহমেদ।
লেখকের পরিচিতি

শিশু চিকিৎসক ও কথাসাহিত্যিক। জন্ম বিক্রমপুরে। ১৯৮২ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা শুরু করে সোভিয়েত ইউনিয়নের লেনিনগ্রাদ শহরে চলে যান বৃত্তি নিয়ে। অনার্সসহ ডাক্তারি ডিগ্রি অর্জন করে সেখানেই বসবাস করেন ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত। সোভিয়েত দেশের পতন ও তৎপরবর্তী রাশিয়া ও প্রাক্তন রিপাবলিকসমূহের বিবর্তন স্বচক্ষে দেখেন এবং এ নিয়ে সক্রিয়ভাবে লেখালেখি করেন। প্রকাশিত বইসমূহ: 'অদৃশ্য মূষিক এক', 'লেনিনগ্রাদের চিঠি', 'কলেজের দিনলিপি', 'দশজন দিগম্বর একজন সাধক', 'হিজল ও দ্রৌপদী মন', 'তিথোনসের তানপুরা', 'লেনিনগ্রাদ থেকে ককেশিয়া', 'ককেশিয়ার দিনরাত্রি', 'যত্র বয় কুরা নদী' ও 'ধুতুরা জোছনার দিন'।