বইটির বিবরণ
বাপ-মা হারা বিজু রাখাল মল্লিক বাবুদের গোরু চরাতে চরাতে একদিন একটা বাচ্চা শাদা ঘোড়া দেখতে পেয়ে তাকে নিজের কুঁড়েঘরে নিয়ে এলো। তার নাম রাখল শাদাপাল। মেয়ের মুখে ঘোড়াটার কথা শুনে রাজা বিজুকে ডেকে বললেন, 'তোর শুনেছি একটা ঘোড়া আছে? কতয় বেচবি?' 'ও আমি বেচব না, রাজাবাবু।' 'কেন রে, তোর ঘোড়া সোনার ডিম পাড়ে নাকি? কাল ভোরে ঘোড়াটা এখানে দিয়ে খাজাঞ্চির কাছ থেকে পঞ্চাশটা টাকা নিয়ে যাস।' ভোর হওয়ার অনেক আগে বিজু তার ঘোড়া নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালাল। কিছুটা যাওয়ার পরই হুংকার শুনে পেছনে চেয়ে দেখে, বল্লমহাতে রাজবাড়ির পেয়াদা রা তাদের ধরতে আসছে। কাছে এসে তারা বিজুর দু-হাত বেঁধে শাদাপালের সারা গা শক্ত দড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে বেঁধে টানতে টানতে নিয়ে চলল মল্লিকরাজের কাছে। বিজু ভোরবেলার আকাশ-বাতাসকে সাক্ষী রেখে প্রতিজ্ঞা করল, তার উঠানের সুপারিগাছে ঘোলো বলয় পূর্ণ হওয়ার আগেই সে রাজাকে পথের ধুলোয় শোয়াবে। বিজু কি পারবে শাদাপালকে উদ্ধার করতে? পারবে কি মল্লিকরাজের কাছ থেকে ঘোড়া আর নিজেকে বাঁচাতে? লোভী রাজার সঙ্গে গ্রামের এক গরিব-দুঃখী ছেলের এ এক বিরাট যুদ্ধের কাহিনি।
লেখকের পরিচিতি

শাদা ঘোড়া, হীরু ডাকাত, গৌর যাযাবর, পাখির খাতা, তালগাছের ডোঙা, আমাজনের জঙ্গলে, বরফের বাগান, গরিলার চোখ, চোখে দেখা গল্প, জল-বাতাসা, দুরুদুরু, চাঁদের তাঁবু প্রভৃতি ছোটোদের বইয়ের লেখক, শিশুসাহিত্যে ভারতের সাহিত্য অকাদেমি ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিদ্যাসাগর পুরস্কারসহ বিবিধ পুরস্কারে ভূষিত অমরেন্দ্র চক্রবর্তীর কয়েকটি বই ইতোমধ্যেই বহু ভাষায় অনূদিত।
কবিতা-পরিচয়, কর্মক্ষেত্র, ভ্রমণ, কালের কষ্টিপাথর, ছেলেবেলা ইত্যাদি পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক, ওয়ার্ল্ড এডিটর্স ফোরামের প্রাক্তন এক্সিকিউটিভ মেম্বার এই গুণী লেখক বিশ্বের নানা দেশে ঘুরেছেন। বিভিন্ন দেশের ওপর তাঁর হাতক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিয়োচিত্র টেলিভিশন চ্যানেলে সুদীর্ঘকাল সম্প্রচারিত হয়েছে। কবি, কথাসাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী অমরেন্দ্র চক্রবর্তী বিষাদগাথা, জিপসি রাত, অশথগাছের চারা, জলে ভাসা জীবন প্রভৃতি উপন্যাসও লিখেছেন। মৃত্যুর অধিক এই মেরে ফেলা, ভূমিকম্পের রাত, ক্ষণের বচন, আজ এই এনেছি গরল ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ এবং বন্ধুভরা বসুন্ধরা, পাহাড়ি গরিলার খোঁজে, পথে পথেই দেশ ও দশ ভ্রমণকথা ইত্যাদি ভ্রমণকাহিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা। এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৩৫।